প্রত্যেক বিনিয়োগকারীকে নিজে রেগুলেটরের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, তাদেরকে মনে রাখতে হবে, বেশি দরে শেয়ার কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হলে কেউ তার দায় নেবে না। এ কারণে প্রত্যেকেরই সতর্কতার সঙ্গে শেয়ার লেনদেন করা উচিত।
অতি মূল্যায়িত শেয়ারে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকার জন্য বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দীন আলী আহমেদ বলেন, গুজবের উপর ভিত্তি করে অতি মূল্যায়িত শেয়ারে বিনিয়োগ করা ঠিক নয়। একটি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা যখন ঘোষণা দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেন, তখণ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কেন সেই শেয়ার কিনবেন? তিনি বলেন, নতুন বিনিয়োগের জন্য এখন অনুকূল সময় নয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঢালাওভাবে বিনিয়োগ করলে পরে পস্তাতে হবে। পুঁজিবাজারের স্বার্থে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি বলেন, এসইসিকে কোনভাবেই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলা ঠিক হবে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনাগুলো সঠিকভাবে পালন করতে পারলেই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে সিএসই সভাপতি বলেন, বাজারের শৃঙ্খলা ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে অবশ্যই তৎপর থাকতে হবে। কারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থেই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিভিন্ন সময়ে আইন ও বিধান প্রণয়ন করে। আজ পর্যন্ত যতো আইন ও বিধান করা হয়েছে, তার সবগুলোই করা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মঙ্গলের জন্য। নিয়ন্ত্রক সংস্থার কোন সিদ্ধান্ত সাময়িকভাবে কিছু বিনিয়োগকারীর বিপক্ষে যেতে পারে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তা নিরাপদ বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সহায়ক।
সিএসই সভাপতি ফখর উদ্দীন আলী আহমেদ বলেন, বাজারে সরবরাহ-ঘাটতি থাকার কারণেই শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকহারে বাড়ছে। এ অবস্থায় সরবরাহ হাতে থাকা শেয়ার বাড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। ইতিমধ্যেই অর্থমন্ত্রী ২৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা দিলেও অজানা কারণে সেই প্রক্রিয়া অগ্রসর হচ্ছে না। কার স্বার্থে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া আটকে আছে- তা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি দেশের অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও পর্যটন খাতের উন্নয়নের জন্য শেয়ার বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহের আহ্বান জানিয়ে বলেন, শেয়ার বাজারে বিপুল পরিমাণ তারল্য প্রবাহের এ সুযোগ সরকারকে কাজে রাগাতে হবে। এ টাকা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। বিনিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে কোম্পানি গঠন করে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও পর্যটন খাতের উন্নয়নে তহবিল সংগ্রহ করা সম্ভব। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই প্রক্রিয়ায় তহবিল সংগ্রহ করতে পারলে একদিকে শেয়ারবাজারে সরবরাহ সঙ্কট কাটবে, অন্যদিকে জাতীয় উন্নয়নে পুঁজি বাজারের শক্তিকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।
ডিএসই সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, শুধু বিদ্যুৎ খাতের জন্যই শেয়ার বাজার থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা উত্তোলন করা যায়। এতে শেয়ার বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। তিনি বলেন, ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়িয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি কমাতে তালিকাভুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও শেয়ার ছাড়া দরকার। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের যেসব কোম্পানি ইতিমধ্যেই তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেসব কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের হাতে রেখে বাকি শেয়ারগুলো আগামী ১০ দিন থেকে ১ মাসের মধ্যে ছাড়ার ব্যবস্থা করা হলে দেশের শেয়ার বাজার বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে। তারা বেসরকারি খাতের ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তির সুযোগ সহজ করতে ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের শর্ত শিথিল করার আহ্বান জানান। শেয়ার বাজারের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কাজে লাগিয়ে কোন সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যাতে টাকা হাতিয়ে নিতে না পারা সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ডিএসই ও সিএসই সভাপতি বলেন, শেয়ার সঙ্কটের সুযোগ নিয়ে কোন বাজে কোম্পানি যাতে বেশি দরে তাদের শেয়ার বিক্রি করতে না পারে সেটা দেখতে হবে। ১৯৯৬ সালে অনেকেই এভাবে অর্থ লুটে নিয়েছে। সে সময় যেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে, তার অধিকাংশই এখন অস্তিত্বহীন হয়ে ওটিসি মার্কেটে চলে গেছে।
Lei ‰`wbK gvbe Rwgb 10-10-2010
No comments:
Post a Comment