একজন বিনিয়োগকারীর প্রধান করনীয় হচ্ছে বিনিয়োগের পূর্বে বিনিয়োগ সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত হওয়া। যেখানে বিনিয়োগ করবেন সেখানে কীধরনের ঝুকিঁ (Risk factor) আছে বিবেচনায় আনা এবং বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত আসার সম্ভাবনা বা বাস্তবতা অধিক এমন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা। এছাডাও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট আইন কানুন সম্পর্কে নূন্যতম ধারনা রাখা এবং এ বাজারে বিনিয়োগকারী হিসাবে তার যে সকল অধিকার আছে সে সম্পর্কে ধারনা রাখা। এবার দেখা যাক শেয়ার ব্যবসা শুরু করার প্রথমিক কাজগুলো কী কী।
1. Customer Account Opening Form: একজন বিনিয়োগকারী শেয়ার বাজারে (Secondary Market) বিনিয়োগে আগ্রহী হলে সর্বপ্রথম তাকে একটি ব্রোকারেজ হাউজে যোগাযোগ করতে হবে। তারপর ব্রোকারেজ হাউচ কতৃক সরবরাহকৃত Customer Account Opening Form সঠিকভাবে পূরণ করে উক্ত হাউজে একটি Cusmtomer Account Open করতে হবে এবং উক্ত Account Number সংগ্রহকরে সংরক্ষণ করতে হবে। সাধারণত এটিকে Customer Code বলে অভিহিত করা হয। পরবর্তীতে লেনদেন করতে হলে এই নাম্বারটির প্রয়োজন হবে।
2. Beneficiary Owner (BO) account opening form: একজন বিনিয়োগকারীকে ডিমেটকৃত/অজডকৃত শেযার (Electronic Share) ক্রয়/বিক্রয়ের জন্য Central Depository of Bangladesh Ltd. (CDBL) এর আওতাধীন যেকোন Depository Participant (DP) তে একটি BO Account Opening Form সঠিকভাবে পূরণ করে DP তে BO account open করতে হবে এবং উক্ত Account Number সংরক্ষন করতে হবে। প্রধানত প্রাথমিক শেয়ার (IPO) তে আবেদন করার জন্য এই নাম্বারটি আপনার প্রয়োজন হবে। এট ১৬ডিজিটের একটি নাম্বার।
3. একজন বিনিয়োগকারী (প্রাতিষ্ঠনিক বিনিয়োগকারী ব্যতীত) একাধিক হিসাব (BO Account) খুলতে পারবেননা। তবে নিজের একক নামে ছাডাও যৌথ নামে (Joint account) আরেকটি হিসাব (মোট ২টি) খুলতে পারবেন।
4. হিসাব খুলার সময় একজন বিনিয়োগকারীকে BO Account Open করার সময় CDBL Laws অনুযায়ী Terms & Conditions (শর্তাবলী) ভালভাবে পড়ে স্বক্ষর করা উচিত।
5. যেকোন DP-তে একজন BO Account Holder-কে শনাক্ত করার জন্য Account Open করার সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন- নাগরিকত্ব সনদপত্র/পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি, ব্যাংক একাউন্টের সার্টিফিকেটের কপি জমা দিতে হবে।
6. Dierct Account Open: একজন বিনিয়োগকারী CDBL-এ Form-06 পূরন করে (প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ) Direct Account Open করতে পারবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে কোন DP-র কাছে যেতে হবেনা।
7. Nominee: A) CDBL By Laws -এর From-23 সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং Nominee এর Percentage (%) B) একজন বিনিয়োগকারী CDBL by Laws Form-23 এর কাগজে Nominee Form-23 ইলেকট্রনিক্স ফরমে রুপান্তরিত হওয়ার পর DP খেকে Nominee Acknowledgement সংগ্রহ করতে পারবে।
8. Power of Attorney: একজন বিনিয়োগকারীকে BO Account Open করার জন্য CDBL By Laws From20-21 সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে এবং ইলেকট্রনিক্স ফরমে রুপান্তরিত হওয়ার পরে ডিপি থেকে বিনিয়োগকারী Power of Attorney Acknowldegement সংগ্রহ করবেন। এখানে উল্লেখ থাকে যে, Power of Attorney Form এ দেয়া কোন তথ্য গোপন করা যাবেনা বা মিথ্যা কোন তথ্য দেযা যাবেনা।
9. Customer Register (As per SEC-Stock broker/dealer & Autohorized representative rules 2000, 13(1): SEC-Stock broker/dealer & Autohorized representative rules 2000, 13(1) অনুযায়ী স্টক এক্সচেঞ্জের প্রত্যেক সদস্য ফার্মের অনুমদিত প্রতিনিধি করা যাবেন। সংশ্লিষ্ট ডিপি থেকে কোন BO Account Holder-এর শেয়ার ট্রান্সফার করতে হলে উক্ত BO Account Holder এর অন্য DPতে একটি লিংক্ একাউন্ট খুলতে হবে। অতএব স্টক এক্সচেঞ্জ অথবা SEC-এর অনুমতি সাপেক্ষে ট্রান্সমিশন ফরম পূরন করে BO Account থেকে লিংক Account-এ শেয়ার ট্রান্সফার করা যাবে।
10. DP থেকে BO Account stock status: একজন বিনিয়োগকারী তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের পর ডিমেটকৃত শেয়ারের সর্বশেষ Balance অর্থাৱ BO Account Stock Status Report DP-থেকে গ্রহন করবেন।
11. Non-Resident Bangladeshi (NRB) BO Account: বিদেশে অবস্থানরত কোন বিনিয়োগকারী যদি NRB BO A/C Open করতে চান তাহলে উক্ত বিনিয়োগকারীকে Client Account এবং NRB BO A/C opening Form-এর সাথে পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। NRB account পরিচালনার জন্য একজনকে Power of Attorney প্রদান করতে হবে। NRB account holder শেয়ার বিক্রয় করার পর চেক/পে-অর্ডার জমা করার জন্য উক্ত NRB Account Holder এর নামে যেকোন Schedule Bank-এ একটি সাধারন ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে। সদস্য ফার্মে শেয়ার বিক্রয়ের বিপরীতে উক্ত সাধারণ ব্যাংক একাউন্টে চেক জমা করতে পারবেন। উক্ত সাধারন ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করার জন্য ব্যাংক আইন অনুযায়ী NRB Account Holder একজনকে Power of attorney প্রদান করতে পারবেন।
12. Non-resident Investors Taka Account (NITA): NITA হিসবের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশীগন ব্যাংকের মাধ্যমে নিম্নোক্ত পদ্ধতি অনুসরন করে বৈদেশিক মুদ্রায় সিকিউরিটিজ ক্রয় করা যাবে। ১) যেকোন অনুমদিত ডিলার/ব্যাংকের মাধ্যমে একটি NITA হিসাব খুলতে হবে যাতে বৈদেশিক মুদ্র সাধারন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে সহজে রূপান্তরযোগ্য হয়। ২) NITA হিসাবের Balance ব্যবহার করে সহজেই বাংলাদেশী শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ক্রয় করা যেতে পারে। এখানে বর্হিগমন রেমিটেন্স বাংলাদেশ ব্যাংকে রিপোর্ট করতে হবে। ৩) NITA হিসাবটি একাউন্ট হোল্ডার নিজে অথাবা তার নোমিনী অথবা অথরাইজড ডিলার দ্বরা পরিচালনা করতে পারেন। ৪) লভ্যাংশ/মুনাফা যা শেয়ার বা সিকিউরিটিজ ক্রয়ের মাধ্যমে অর্জিত হয় বা NITA হিসাবের মাধ্যমে ক্রয়কৃত শেয়ার বা সিকিউরিটিজের বিক্রয়কৃত অর্থ NITA হিসাবে জমা করা যাবে। উল্লেখ্য যে, NITA হিসাব হতে শুধুই শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয় করা সম্ভব এবং প্রযোজনে আপনার জমাকৃত অর্থ শেয়ারবাজারের লাভ সহ দেশের বাইরে তথা আপনি বিদেশে যেথানে অবস্থান করছেন সেখানে পাওয়া সম্ভব।
13. Buy/Sell Order Maintain: বিনিয়োগকারী ব্রোকার হাউজে গ্রহক হওয়ার পর শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডর দিতে পারবেন। যদি বিনিয়োগকারী শেয়ার ক্রয় করতে চায় তাহলে বিনিয়োগকারীর কাস্টোমার একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমান টাকা থাকা সপেক্ষে শেয়ার ক্রয়ের অর্ডর স্লিপে ক্রয়ের অর্ডর দিতে পারবেন। শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয়ের শেষে অবশ্যই Buy Order/Sell Order এবং CDBL Shareবিক্রয়ের ক্ষেত্রে Pay in Transfer Form পূরণ করতে হবে।
14. Trade Confirmation Statement: বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একান্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডর এক্সিকিউট হওয়ার পর Trade Confirmation Statement-এ বিনিয়োগকারীর স্বক্ষর করে তার কপি গ্রহন ও সংরক্ষন করবেন।
15. বিনিয়োগকারী উক্ত ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়ের জন্য টাকা জমা করলে ব্রোকারেজ হাউজ কতৃক প্রদত্ত ছাপানো Money Receipt অবশ্যই গ্রহন করতে হবে। Mone Receipt এ ব্রোকারেজ হাউজের কোন অনুমদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষর অবশ্যই থাকতে হবে।
16. Payment Voucher: বিনিয়োগকারী ব্রোকার হাউজে তার কাস্টমার একাউন্ট হতে শেয়ার বিক্রয়ের বিপরীতে টাকা উত্তোলন করতে চাইলে উক্ত কোন অনুমদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষরসহ ব্রোকারেজ হাউজ কতৃক প্রদত্ত ছাপানো Payment Voucher অবশ্যই গ্রহন ও সংরক্ষন করতে হবে। বিনিয়োগকারী উক্ত ব্রোকার হাউজে তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের টাকা জমা ও উত্তলনের সমস্ত হিসাব ব্র্রোকারেজ হাউহ হতে সংগ্রহ করতে পারবেন।
17. Telephonic Order: বিনিযোগকারী তার সিকিউরিটিজ ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডার যদি টেলিফোনের মাধ্যমে দেন, তাহলে তাকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্য শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের অর্ডর বিল বুক স্লিপে স্বাক্ষরসহ অর্ডার লিপিবদ্ধ করতে হবে এবং Trade Confirmation Statement অবশ্যই স্বাক্ষর করে তার কপি গ্রহন করতে হবে।
18. Share Received Bill: বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একাউন্ট থেকে যদি শেয়ার গ্রহন করতে চায় তাহলে Share Received Bill-এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজের অনুমদিত প্রতিনিধির স্বাক্ষর সহ বিনিয়োগকারীকে উক্ত বিলে স্বাক্ষকর করে শেয়ার গ্রহন করতে হবে। এটি মূলত কাগজী শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
19. Stock Report: বিনিয়োগকারী ব্রোকারেজ হাউজে তার কাস্টমার একাউন্টে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের পর তাকে কাস্টমার একাউন্টে শেয়ারের সর্বশেষ অবস্থা জানার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্রোকার হাউজ থেকে কাস্টমার একাউন্টের Stock Report অবশ্যই গ্রহন করতে হবে।
20. Monthly/Weekly Trade status verification or Client Ledger Verification: বিনিয়োগকারী প্রতি সাপ্তাহে অথবা মাসের শেষে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ থেকে শেয়ার ক্রয়/বিক্রয়ের টাকা পয়সা জমা ও উত্তোলনের সর্বশেষ হিসাব পরীক্ষার জন্য বিনিয়োগকারী Account Statement গ্রহন করবেন।
Central Depository Syestem (CDS): সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি সিস্টেম (CDS) এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে সিকিউরিটিজ সমূহ ইলেক্ট্রনিক ফর্মে সংরক্ষন ও লেনদেন করা যায়। CDBL কে ব্যাংকের সাথে তুলনা করা যায়। ব্যাংক যেভাবে জমাকারীর টাকার হিসাব রাখে CDBL সেভাবে বিনিয়োগকারীদের সিকিউরিটিজ ইলেক্ট্রনিক ফর্মে সংরক্ষন করে। CDS এর সুবিধা গুলো হচ্ছে-
1. অনুপযুক্ত কাগুজে সার্টিফিকেট হস্তান্তর রোধ
2. তাৱক্ষনিক শেয়ার হস্তান্তর (যদিও আমাদের দেশে ট্রেডিং সিস্টেম এথনও সেই পর্যায়ে উণ্নীত হয়নি)
3. কাগজের বাড়তি ঝামেলা এডানো
4. কাগজের সার্টিফেকেটর বাডতি ঝামেলা এডানো যেমন হারিয়ে যাওয়া, চুরি হওয়া, ক্ষতিসাধন বা জালিয়াতি
CDS সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন http://www.cdbl.com.bd
Registar of Joint Stock Companies:
কোন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি প্রথম আইনগত স্বীকৃতি হলো নিবন্ধন সনদপত্র। এই নিবন্ধন সনদপত্র প্রদানের জন্য গঠিত হয়েছে রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্মস। যারা প্রথমে কোম্পানীটি গঠন করেন মানে উদ্যোক্তাদের এই নিবন্ধনের কাজটি করতে হয়। নিবন্ধন সনদপত্র পাওয়ার পরই কোন কোম্পানী পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তির জন্য আবেদন করার সময় প্রস্তাবিত কোম্পানীর মেমরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস আব এসোসিয়েশন জমা দিতে হয়। এই মেমরেন্ডাম এন্ড আর্টিকেলস আব এসোসিয়েশন তৈরির জন্য পেশাদার ইস্যু ব্যবস্থাপক (Issue Manager/Investment Banker) অথাবা আইনজীবির সহায়তা নেয়া যায়্।
Member of Stock Exchange:
DSE-তে সর্বমোট ২৪০+ সদস্য আছেন। এদের মধ্যে ১৮০+ জন DSE-তে সিকিউরিটিজ লেনদেন করার জন্য SEC থেকে Stock broker/Dealer হিসাবে অনুমোদন প্রপ্ত।
Share Holder:
কোন কোম্পানীর শেয়ারের মালিকদের বলা হয় শেয়ার হোল্ডার। যেমন: আপনি যাদি বাটা সু কোম্পানীর ১০০টি শেয়ার ক্রয় করেন তবে আপনি বাটা সু কোম্পানীর একজন শেয়ার হোল্ডার বা আংশিক মালিক।
Listed Securities:
লিস্টেড সিকিউরিটিজ বলতে ঐসব শেয়ার/বন্ড বা ডিবেন্চার কে বোঝায় যেগুলো DSE/CSE-তে লেনদেনের জন্য লিপিবদ্ধ। (CSE= Chittagong Stock Exchange) যেমন - রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্মস-এ কয়েক হাজার কোম্পানীর নাম লিপিবদ্ধ আছে। কিন্তু সেগুলো DSE/CSE-তে লিপিবদ্ধ না থাকার কারনে সেগুলোর শেয়ারের লেনাদেন হয়না। যেমন- অটবি লিমিটেড (Furniture Company) । কিন্তু বাটা সু কোম্পানীর শেয়ার লেনাদেন হয। কারন সেটি রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ এন্ড ফার্মস-এ লিপিবদ্ধ এবং DSE/CSE-তেও লিপিবদ্ধ।
Investor's Protection Fund:
বিনিয়োগকারীদের স্বর্থে DSE Investors Protection Fund গঠন করা হয়েছে। যদি কোন ব্রোকার বা ডিলার ফার্ম বন্ধ হয়ে যায়/লিকুইডেশনে চলে যায়/দেউলিয়া ঘোষিত হয় তখন ঐ ফান্ড হতে একটি নির্ধারিত পরিমান অর্থ সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের প্রদানের ব্যবস্থা রয়েছে।
Judges Panel:
বিনিয়োগকারীদের স্বর্থ রক্ষার্থে ব্রোকার/ডিলারের বিরুদ্ধে কোন বিণিয়োগকারীর অভিযোগের নিষ্পত্তিকল্পে ৫ জন অবসর প্রাপ্ত ডিস্ট্রিক্ট জাজের সমন্বয়ে জাজেস প্যানেল গঠন করা হয়েছে। যারা সরাসরি বিণিয়োগকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তিকল্পে কাজ করেন।
DSE Idices:
DSE Index বা সূচক হচ্ছে একটি সাধারণ পরিমাপ। য়ার মাধ্যমে আমরা শেয়ার বাজারের সার্বিক অবস্থা বুঝতে পারি। বাজারের গতি প্রকৃতি সঠিকভাবে বোঝার জন্য বর্তমানে DSE-তে সার্বিক মূল্যসূচক (DSE All share Price Index), ডিএসই সাধারণ মূল্যসূচক (DSE General Index) এবং ডিএসই ২০ (DSE 20) এ তিন ধরনের সূচক প্রচলিত আছে। তবে বিভিন্ন সেক্টর ভিত্তিক যেমন ব্যাংকিং, টেক্সটাইল, বিদ্যুত ও জ্বালানি, সিমেন্ট, বিনিয়োগ প্রভৃতির ধারনা পাওয়ার জন্য সূচক চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে CSE-তে এই সূচকগুলো এখনি চালু আছে। কিন্তু CSE-তে অনেক শেয়ার খুবই কম বা লেনদেন না হওয়ার কারনে সেক্টর ভিত্তিক সূচকগুলো বাজারের গতি প্রকৃতির যথাযথ ধারনা দিতে ব্যর্থ হয়। আসুন এবার দেখে নেই কোন সূচক কীসের ভিত্তিতে তৈরি।সার্বিক মূল্যসূচক (DSE All share Price Index):
মিচুয়াল ফান্ড, ডিবেঞ্চার, বন্ড এবং সকল তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের (শেয়ার) সমন্বয়ে ডিএসই সার্বিক মূল্যসূচক গঠিত।
ডিএসই সাধারণ মূল্যসূচক (DSE General Index) :
মিচুয়াল ফান্ড এবং এ এবং বি ক্যাটাগরির সিকিউরিটিজের সমন্বয়ে ডিএসই সাধারণ মূল্যসূচক গঠিত।
ডিএসই ২০ (DSE 20 Index):
তালিকাভুক্ত কোম্পানীসমূহের মধ্য হতে পারফরমেন্সের ভিত্তিতে এবং আরো কিছু বৈশিষ্ঠের ভিত্তিতে সেরা ২০টি কোম্পানী নিয়ে ডিএসই ২০ (DSE 20 Index) গঠিত। এর ফলে বিনিয়োগকারীগন সেরা কোম্পানীগুলোর মূল্যের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারনা পেতে পারে। যে শর্তপূরণ সাপেক্ষে ডিএসই ২০ সূচক গঠিত হয় সেগুলো হল-
1. যে সকল কোম্পানীর বাজার মূলধনের পরিমান ২০কোটি টাকা বা তার উর্দ্ধে
2. নূন্যতম ২০শতাংশ শেয়ার জনসাধারনের হাতে রয়েছে (কিন্তু প্রকৃতপক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই তা নেই)
3. ক্রমাগত বিগত ৩ বছর যাবত অন্তত ১০শতাংশ হারে লভ্যাংশ প্রদান করে আসছে
4. ৬ মাসে অন্তত ৯৫% লেনদেন দিবসে শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে (অনেক ক্ষেত্রেই শেয়ার বেচাকেনা হলেও পরিমান খুবই নগন্য)
5. নিয়মিত বার্ষিক সাধারনসভাসহ কোম্পানীর পরিচালনা ব্যবস্থা নূন্যতম মান বজায় রাখছে
এই শর্তাবলী পূরণ করছে এমন কোম্পানীর পরিমান অনেক হয়ে যাওয়ায় এবং শেয়ার বাজারকে আরও ভালভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারার প্রয়োজনে এই সূচককে ডিএসই ২৫-এ উণ্ণীত করা হবে। তার মানে এরপর থেকে এতে ২৫টি কোম্পানী অন্র্তভুক্ত করা হবে।
শেয়ার শ্রেনীবিভাগ/বিভাগীকরন (Stock Classification/Categorization):
DSE-তে তালিকাভুক্ত কোম্পানীগুলোর পারফরমেন্সের ভিত্তিতে A, B, G, N এবং Z এই বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের সাধারনভাবে ভাল মন্দ শেয়ার চিনিয়েদেবার জন্য এই বিভাগীকরন করা হয়েছে।
A-Category: নিয়মিত্ বার্ষিক সাধারন সভা করা সহ ১০% বা তার উর্দ্ধে লভ্যাংশ (Dividend) প্রদানকারী কোম্পানীসমূহ এ গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত।
B-Category: নিয়মিত্ বার্ষিক সাধারন সভা করা সহ ১০% -এর নীচে লভ্যাংশ (Dividend) প্রদানকারী কোম্পানীসমূহ এ গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত।
G-Category: গ্রীন ফিল্ড অর্থাৱ শেয়ার বাজারে আসার পূর্বে উত্পাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে শুরু করেনি এমন কোম্পানীসমূহ এই গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত। DSE-র ইতিহাসে এপর্য়ন্ত কেবন লাফার্জ-সুরমা সিমেন্ট-ই এই গ্রুপের অধীনে লিপিবদ্ধ হওয়া একমাত্র কোম্পানী। কিন্তু গত বছর থেকে সম্পূর্ণ উত্পাদন কার্যক্রম শুরু করার পরও কোন লভ্যাংশ দিতে না পারায় Z-গ্রুপে অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।
N-Category: এই গ্রুপে অর্ন্তভুক্ত হবার ক্ষেত্রে ভাল/মন্দ ব্যবসায়িক দক্ষতার কোন প্রভাব নেই। সাধারনত কোন শেয়ার DSE-তে লিপিবদ্ধ হওয়ার পর কোন আর্থিক বছর শেষ হওয়ার পূর্বে পর্যন্ত এই গ্রুপে রাখা হয়। আর্থিক বছর শেষ হলে পূর্বোক্ত ব্যবসায়িক দক্ষতার উপর ভিত্তি করে A, B অথবা Z গ্রুপে স্থানান্তর করা হয়।
Z-Category: নিয়মিত বার্ষিক সাধারন সভা করতে ব্যর্থ/লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ কিংবা সর্বশেষ ৬ মাস উত্পাদন বন্ধ থাকলে এই গ্রুপে স্থানান্তর করা হয়।
Clearing and Settlement:
ব্রোকার হাউজে দৈনিক লেনদেনকৃত সিকিউরিটিজ নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহন ও বিতরন এবং ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করা হয়। যারা প্রথম দিকে এ ব্যবসার সংগে জড়িত হন তাদের একটা খুব সাধারন প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে আমার নামে শেয়ার আসবে, কীভাবে বিক্রি করার পর টাকা পাবো, এ লেনদেন গুলো কীভাবে হয়? সাধারণত এসব কাজ হয় Clearing and Settlement বিভাগের মাধ্যমে। এখানে আসুন দেখে নেই এই শেয়ার এবং টাকা আদান প্রদানের ব্যপার গুলো কীভাবে ঘটে? ১। আপনি যখন কোন শেয়ার ক্রয় করেন তখন আপনার ব্রোকার শেয়ারের মূল্য বাবদ আপনার Customer Code খেকে টাকা সমন্বয় করেন ২। আপনার ব্রোকার তারপর তাদের প্রাপ্য কমিশন রেখে বাকী টাকা স্টক এক্সচেন্জের হিসাবে স্থানান্তর করেন এবং আপনার শেয়ার স্টক এক্সচেন্জ থেকে বুঝে নিয়ে আপনার Customer ID তে জমা করেন ৩। যিনি আপনার কাছে শেয়ারটি বিক্রি করেছেন তিনিও কোন এক ব্রোকারের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন, বিক্রেতার ব্রোকার স্টক এক্সচেন্জে শেয়ার জমা করে তাদের প্রাপ্য টাকা বুঝে নেন ৪। তারপর বিক্রেতার ব্রোকার তাদের প্রাপ্য কমিশন রেখে বাকী টাকা বিক্রেতার হিসাবে জমা করেন । সাধারনত এভাবেই সম্পূর্ন লেনদেন প্রক্রিয়া শেষ হয়। আর এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ২/৩ দিন সময়ের প্রয়োজন হয়। যে কারনে একটি শেয়ার ক্রয়ের পর পর সংগে সংগেই আপনি তা বিক্রি করতে পারেননা কিংবা আপনার হিসাবে তত্ক্ষনাত টাকা জমা হয়ে যায় না। বরং ৩/৪ দিন পর আপনার হিসাবে শেয়ার কিংবা টাকা জমা হয়। আর এই প্রক্রিয়া বিভিন্ন গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম সময় লাগে। আসুন দেখি কোন কোন গ্রপের শেয়ার কয় দিন পর আপনার একাউন্টে জমা হবে।
A,B,G, N গ্রুপের ক্ষেত্রে এ সময় ৩ দিন। অর্থাৎ ৪র্থ দিন আপনি শেয়ার কিংবা টাকা পাবেন। তখন আপনি আপনার ক্রীত শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন বা বিক্রিত শেয়ারের টাকা তুলতে পারবেন।
Z গ্রুপের ক্ষেত্রে এ সময় ৭ দিন। অর্থাৎ ৮ম দিন আপনি শেয়ার কিংবা টাকা পাবেন। তখন আপনি আপনার ক্রীত শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন বা বিক্রিত শেয়ারের টাকা তুলতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রশ্ন জাগতে পারে z- গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে কেন এত সময়ের প্রয়োজন হয়? কী কী শর্তসাপেক্ষে গ্রুপিং করা হয় তা আমি আগেই বলেছি। দেখে থাকবেন z-গ্রুপ হচ্ছে সবচেয়ে কম কিংবা বিনা লাভ প্রদানকারী কোম্পানীর শেয়ার। এজন্যই এই সব শেয়ার ক্রয়/বিক্রয় নিরুৎসাহিত করার জন্য এই শেযার সেটেলমেন্টর জেন্য সাপ্তাহের মাত্র ১টি দিন বরাদ্দ এবং ৭দিনে এ শেয়ার স্থানান্তর হয়।
Clearing and Settlement-এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল স্পট ট্রেড (Spot trade)। স্পট ট্রেডের ক্ষেত্রে মাত্র ১দিনে A,B,G, N গ্রুপের শেয়ার/টাকা আপনার হিসাবে স্থানান্তর হয় এবং z-গ্রুপের শেয়ার/টাকা ৩দিনে আপনার হিসাবে স্থানান্তর হয়।
তাহলে আসুন দেখি spot trade-কী? অনেকদিন যাবৎ এ ব্যবসা করছেন এমন অনেকেও এ বিষয়টি পরিষ্কার না। যখন কোন কোম্পানী লভ্যাংশ প্রাপ্তির জন্য কোন Record date নির্ধারন করে তথন ঐ নির্দিষ্ট দিনে আপনার হিসাবে ঐ কোম্পানীর শেয়ার থাকলে আপনি লভ্যাংশ পাবেন। কিন্তু ধরুন ১৪ জানুয়ারি Record date নির্ধারন করা হল। সেক্ষেত্রে যদি স্বাভাবিক নিয়ম অনুসরন করা হয় তাহলে আপনি ১৩তারিখ শেয়ার কিনলেও আপনি লভ্যাংশ পাবেননা। কারন শেয়ার আপনার হিসাবে আসবে ১৭ তারিখে। এই অসুবিধা দূর করার জন্য Record date এর ৩দিন আগে থেকে Priority basis-এ ঐসব শেয়ার Settle করা হয়। এজন্য এগুলো স্পট-এ ট্রেড করা হয়। অর্থাৎ তাৎক্ষনিক settlement। এই শেয়ার গুলো দিন শেষেই স্থানান্তর করা হয়। Treasury Bond: ট্রেজারী বন্ড বলতে সরকার কতৃক ইস্যুকৃত বন্ডকে বোঝানো হয়। এই বন্ড সঞ্চয় পত্রের সঙ্গে তুলনীয়। কিন্তু যারা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেন তারা চাইলেই সেটি ভাঙাতে/বিক্রি করতে পারেন না। কিন্তু ট্রেজারী বন্ড সেকেন্ডারী মার্কেটে লেনদেন হয় বিধায় এটি সহজেই বিক্রয়যোগ্য। (যদিও ট্রেজারী বন্ডের বাজার এখনও ততটা সক্রিয় নয়)। ১ জানুয়ারী ২০০৫ হতে শেয়ারবাজারে ট্রেজারী বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। যারা ঝুকিঁর কারনে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে ভয় পান আবার সহজেই বিক্রি করে বা ভাঙাতে পারবেন না বলে সঞ্চয় পত্র/ফিক্সড ডিপোজিট করতে পারেননা তারা ট্রেজারী বন্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। যেহেতু এটি সরকার কতৃক্ ইস্যুকৃত বন্ড তাই এতে বিনিয়োগ হারানোর ঝুকিঁ নেই বললেই চলে।
Primary Market: প্রাথমিকভাবে যখন কোন কোম্পানী সাধারন জনগনের কাছ থেকে মূলধন উত্তোলনের জন্য শেয়ার ইস্যু করে তখন এটি প্রাথমিক বাজার/Primary Market. সহজ কথায় বলতে গেলে যখন কোন কোম্পানী Initial Public Offering (IPO) এর মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে সেটিই Primary Market.
আরও জানতে চাইলে সৈকতের ব্লগ ভ্রমন করতে পারেন।আপনি শেয়ার বাজারের খুটিনাটি বিষয় সম্পর্কে ভালো জানতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment