অর্থনৈতিক রিপোর্টার: রেকর্ড দিয়ে শুরু হলেও সপ্তাহের শেষটা ভাল হয়নি দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-র। লেনদেন ও উভয় সূচকের পতন দিয়ে শেষ হয়েছে এ বাজার। ৪ কার্যদিবসের লেনদেন ও সূচকে ঊর্ধ্বমুখী অবস্থা ধরে রাখতে পারেনি বৃহস্পতিবার। গতকাল এ বাজারে ডিএসই’র সাধারণ সূচক ২০ পয়েন্ট কমেছে।
আর লেনদেন কমেছে ৫৭ কোটি টাকা। তবে বাজারে ২৪৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হলেও দর বেড়েছে ১০৭টির, কমেছে ১৩১টি কোম্পানির। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ডিএসই’র তালিকাভুক্ত ২১টি খাতের মধ্যে মাত্র একটি খাতের শেয়ার দর ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে দিনব্যাপী শেয়ার বাজারে আলোচানার কেন্দ্র বিন্দু ছিল ব্যাংকিং খাতের। ফলে এ খাতের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমলেও ডিএসই’র লেনদেনের শীর্ষ ১০ এ ৬টি স্থানে জায়গা করে নিয়েছে। এ ছাড়া শীর্ষ স্থানে রয়েছেন বিদ্যুৎ খাতের বে-সরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ার। এ কোম্পানির শেয়ার দর কিছুটা বাড়লেও শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা। খাত ওয়ারি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ব্যাংকিং খাতের ৩০টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১২টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৮টি কোম্পানির শেয়ার দর। সিমেন্ট খাতের ৬টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে মাত্র ১টির, কমেছে ৪টির ও লেনদেন স্থগিত রয়েছিল ১টি কোম্পানির। সিরামিক খাতের ৫টি কোম্পানির মধ্যে বেড়েছে ৩টির, কমেছে ২টির। ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের ২১টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র ৪টির বেড়েছে, কমেছে ১৫টির ও লেনদেন স্থগতি রয়েছে ২টির। আর্থিক খাতের ২১টির মধ্যে ৭টির বেড়েছে, কমেছে ১৪টির। খাদ্য খাতের ১৪টির মধ্যে ৬টির বেড়েছে, কমেছে ৬টির আর ২টির লেনদেন হয়নি। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ১১টির মধ্যে মাত্র ২টির বেড়েছে, কমেছে ৯টির। বীমা খাতের ৪৪টির মধ্যে ১৯টি বেড়েছে, কমেছে ১৫টির। তবে শেয়ার বাজারে মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ারের চিত্রটা ছিল ভিন্ন। বেশির ভাগে কোম্পানির শেয়ার দর যখন কমার প্রবণতা দেখা দেয় ঠিক সেই সময় গিয়ে এ খাতের শেয়ার দর বাড়তে থাকে। গতকালও এর কোন ব্যতিক্রম হয়নি। এখাতে ২৬টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ৩টি ইউনিদের দর কমেছে, বাকি ২৩টির শেয়ার দর বেড়েছে। এদিকে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ও তারল্য ক্রমাগত বেড়ে চললেও শেয়ার সরবরাহ বাড়ছে না। ফলে স্বল্পসংখ্যক শেয়ারের ওপর চাপ বাড়ায় এদের মূল্যও অনেক বেড়ে গেছে। অনুকূল বাজারের সুবিধা নিতে অসাধু বিনিয়োগকারীদের একাধিক সিন্ডিকেটও এখন দারুণ সক্রিয়। এসব কারণে দুর্বল মৌলের শেয়ারের মূল্যও অনেক বেড়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে গেছে। তবে আজ (বৃহস্পতিবার) বাজার কিছুটা সংশোধন হয়েছে। এ সংশোধন আরও বেশি হওয়া দরকার বলেও তারা মত প্রকাশ করেন। গতকাল ডিএসইতে ২৪১টি কোম্পানির ১০ কোটি ৭১ লাখ ৮৪ হাজার ২৬৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। ডিএসইতে আজ মোট লেনদেনের পরিমাণ ১৯৭৫ কোটি ৮৯ লাখ ৪৩ হাজার ১০৩ টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ৫৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা কম। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ মূল্য সূচক আগের দিনের চেয়ে ২০ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৪৯২ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে ডিএসই-২০ মূল্য সূচক আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৪২০ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
No comments:
Post a Comment